বর্তমানে কবুতরের ব্যবসা করে অনেকেই সফলতা অর্জন করেছে। তবে আপনারাও কবুতর পালন করে লাভজনক ব্যবসা করতে পারেন। তাই আপনাদের জানতে হবে কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় এই সম্পর্কে। এতে করে আপনারা বেশি বাচ্চা দেওয়া জাতের কবুতর লালন পালন করে সেগুলোর বাচ্চা বিক্রি করে ব্যবসা করতে পারবেন। এজন্য আপনাদের সুবিধার্থে আমরা আজকের পোস্টটিতে কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় ও কবুতরের ডিম পাড়ার লক্ষণ গুলো সম্পর্কে আলোচনা করব।
প্রিয় পাঠক আপনি যদি কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় সহ কবুতর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি এখনই মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
সূচনা
বর্তমানে কবুতর পালন করা একটি লাভজনক ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে আমাদের দেশে প্রায় বেশিরভাগ ব্যবসায়ী কবুতর লালন পালন করে আসছে। এই কবুতর বিক্রি করে তারা আর্থিকভাবে সফল হচ্ছে। বর্তমানে যুবসমাজ কবুতর এর খামার গড়ে তোলার জন্য সোচ্চার হয়ে উঠেছে। যার ফলে কৃষির দিক দিয়ে দেশ অনেক উন্নত হচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের কবুতর পাওয়া যায়। তার মধ্যে আপনাকে একটি ভালো মানের ভালো জাতের কবুতর চিনতে হবে এবং সেগুলো যদি আপনি লালন পালন করতে চান তাহলে একটি খামার গড়ে তুলতে হবে।
আরো পড়ুনঃ কাজুবাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
আপনারা যারা কবুতরের খামার গড়ে তুলতে চান তাদের অবশ্যই কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় সে বিষয়টি জেনে কবুতর নির্বাচন করতে হবে। কারণ কবুতর বেশি বাচ্চা দিলেই আপনি লাভবান বেশি হবেন। তাই এই বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। আর এজন্য আমরা আজকের পোস্টটিতে আপনাদের জন্য কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় এর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরব তাই শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন।
কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক
আপনার অনেকে আমাদের কাছে প্রশ্ন করে থাকেন কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক অর্থাৎ বলতে গেলে কোন জাতের কবুতর পালন করলে লাভজনক বেশি হওয়া যায়। এ সম্পর্কে আমরা আজকের এই অংশটিতে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করব। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ১২০ প্রজাতির কবুতর পাওয়া যায়। এর মধ্যে বাংলাদেশের রয়েছে ২০ প্রজাতির কবুতর যেগুলো আপনারা কিনে লালন পালন করতে পারবেন। এর মধ্যে আপনাদের অবশ্যই ভালো জাতের কবুতরটি নির্বাচন করতে হবে। যাতে আপনি কবুতর পালন ব্যবসায় লাভ করতে পারেন।
বর্তমানে কবুতর পালনের ব্যবসায়ীরা বিদেশী জাতের কবুতর বেশি পছন্দ করে থাকে। কারণ বাংলাদেশি কবুতর লালন পালন করে তেমন লাভজনক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। আবার বাংলাদেশী কবুতর তেমন সুযোগ-সুবিধা বেশিরভাগ দিয়ে থাকে না। তবে বর্তমানে বিদেশী জাতের কবুতরগুলো অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে যার ফলে বর্তমানে খামারিরা বিদেশে জাতের কবুতর পালনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাই আপনাদের জানতে হবে কোন জাতের কবুতর পালন করে লাভজনক।
আমাদের জানামতে বর্তমানে গিরিবাজ কবুতর পালন করা খুবই লাভজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ এই কবুতরটি অন্যান্য কবুতর থেকে বেশি বাচ্চা দিয়ে থাকে। তাছাড়া এরা ডিম পাড়ার সাথে সাথে তার কিছুদিন পরে আবার বাচ্চা দিয়ে থাকে। যার ফলে এই কবুতর পালন করা খুব লাভজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও আরেকটি কবুতর রয়েছে সেটি হল গোবিন্দ কবুতর যেটিও ভালো পরিমাণ বাচ্চা দিয়ে থাকে। এটিও আপনারা লালন পালন করতে পারেন। তাহলে বুঝতে পারলেন কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক।
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়
আপনাদের কাঙ্ক্ষিত মূল প্রশ্নের উত্তরে আমরা চলে এসেছি। আপনাদের প্রশ্ন ছিল যে কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়। আমরা এই সম্পর্কে আজকের এই অংশে গুরুত্ব সহকারে বিস্তারিত আলোচনা করব। বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক ধরনের কবুতর রয়েছে এর মধ্য থেকে আপনাকে ভালো জাতের কবুতর নির্বাচন করে লালন পালন করতে হবে যদি আপনি ব্যবসা করতে চান তাহলে অবশ্যই বিদেশী কোনো ভালো জাতের কবুতর পালন করতে হবে।
গিরিবাজঃ বর্তমানে সবচেয়ে বেশি বাচ্চা দেয় সেই কবুতর টির নাম হলো গিরিবাজ কবুতর। যেটি বর্তমানে অধিক বাচ্চা দিয়ে থাকে। এই জাতের কবুতর সাধারণত অন্যান্য কবুতর থেকে বেশি বাচ্চা দিয়ে থাকে। তাছাড়া এই কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং বাংলাদেশের আবহাওয়ার সাথে অভিযোজন করতে পারে। তাছাড়া এই কবুতরটি বাচ্চা দেওয়ার সাথে কিছুদিনের মধ্যে আবার ডিম দেয়। অর্থাৎ বলা যায় গিরিবাজ কবুতর এক মাসের মধ্যেই ডিম এবং বাচ্চা দিয়ে থাকে।
যেটি অন্যান্য কবুতর দিতে পারে না। তাছাড়া এই কবুতরের দেহের গঠন অনেক শক্ত ও এনার্জি সম্পূর্ণ। এই কবুতরটি আকাশ অনেক দূরে উড়তে পারে। তাছাড়া কবুতরটি শরীরে অনেক শক্তি থাকায় তারা প্রচুর বাচ্চা ও ডিম দিতে পারে। এছাড়াও কবুতরটি বিভিন্ন জায়গায় উড়ে গিয়ে তার বাচ্চার জন্য পুষ্টিকর খাবার নিয়ে আসে ফলে বাচ্চা দ্রুত বড় হয়। এছাড়াও আরেক প্রজাতির কবুতর রয়েছে সেটি হল ফেন্সিন কবুতর।
যেটিও বর্তমানে অধিক জনপ্রিয় হয়েছে বেশী বাচ্চাদের জন্য। তবে আপনি যদি কবুতর পালন করে সফল ব্যবসায়ী হতে চান তাহলে অবশ্যই গিরিবাজ কবুতর দিয়ে শুরু করতে পারেন। কারণ এ জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়। তাছাড়া অনেক জাতের কবুতর রয়েছে যার নাম জালালি কবুতর। এটিও অধিক বাচ্চা দিয়ে থাকে।
জালালী কবুতরঃ এটিও একটি উন্নত জাতের কবুতর। এই কবুতরটিও গিরিবাজ কবুতরের মত বেশি ডিম দিতে পারে। তবে জানা যায় এই কবুতরটি ডিম দিয়ে থাকলে তার নিজের ডিম খুব কম নষ্ট করে থাকে। এই কবুতরটি ডিম দেওয়ার পর যদি বাচ্চা ফুটে তাহলে তার ২০ দিন পর কবুতরটি আবার ডিম দিতে শুরু করে। তাহলে বুঝতেই পারতেন গিরিবাজ কবুতরের মত জালালি কবুতর ভালো ডিম দিয়ে থাকে।
যদি এই দুটি কবুতরের কথা বলেন তাহলে কম্পেয়ার করে দেখলে জালালী কবুতরের থেকে গিরিবাজ কবুতর একটু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন বেশি এবং ডিম একটু বেশি দিয়ে থাকে। তবে জালালি কবুতরও বেশি ডিম দিতে সক্ষম। তবে গিরিবাজ কবুতর একটু বেশি এনার্জি থাকায় তারা অনেক ডিম দিতে পারে এবং আকাশে অনেক দূরে উপরে উড়তে পারে। আপনারা এই দুটি কবুতর এর মধ্যে যে কোন একটি লালন পালন করতে পারেন। আবার দুটিও লালন পালন করতে পারেন।
কবুতরের ডিম পাড়ার লক্ষণ
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা হয়তো এতক্ষণে কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় সে বিষয়টি ভালোভাবে জেনে গেছেন। তবে আপনাদের এখন এই বিষয়টি যেন খুবই প্রয়োজন যে কবুতরের ডিম পাড়ার লক্ষন কি। আমার এখন এই অংশে কবুতরের ডিম পাড়ার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। এর ফলে আপনারা কবুতর কখন ডিম দিবে সেই লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
আমাদের জানামতে কবুতর সাধারণত নর ও মাদি একসঙ্গে রাখলে ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে বাচ্চা দিয়ে দেয়। আর যদি মাদি কবুতরটি সুস্থ সবল থাকে তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ডিম দিয়ে থাকে। আবার অনেক সময় দেখা যায় কবুতর ডিম দেওয়ার জন্য ডিমের হাঁড়ির মধ্যে বসে থাকে তাহলে বুঝবেন তখন কবুতর ডিম দিবে। সেই সময় আপনারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কবুতর সাধারণত সন্ধ্যায় এবং বিকাল বেলায় ডিম দিয়ে থাকে। চলুন আমরা এখন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
- প্রথমে যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে সেটি হলো মাদি কবুতর সাধারণত ডিম দেওয়ার আগে ডিম পাড়ার নির্দিষ্ট স্থানে বসে থাকে।
- ডিম পাড়ার সময়ে কবুতর ডিমের হাঁড়ির মাঝখানে বসে থাকবে।
- আর কবুতর সাধারণত ডিম দিতে পছন্দ করে বিকালে ও সন্ধ্যার সময়।
- কবুতরের দিকে লক্ষ্য রাখবেন ডিম পাড়ার আগে কবুতরগুলো অর্থাৎ নর কবুতর ও মাদি কবুতর সব সময় একসাথে থাকে।
- মাদি কবুতরের পিছনে নর কবুতর সব সময় লেগে থাকে।
- দেখবেন ডিম দেওয়ার আগে নর কবুতর মাদি কবুতরকে বিরক্ত করতে থাকে।
- আর মাদি কবুতর ডিম দেওয়ার আগে তার লেজ গুটিয়ে নেয়।
তাহলে আশা করছি আপনারা কবুতরের ডিম পাড়ার লক্ষন গুলো জেনে গেলেন যার ফলে আপনারা অনায়াসেই এখন বুঝতে পারবেন কবুতর কখন ডিম দিবে।
ভালো জাতের কবুতর চেনার উপায় – ভালো কবুতর চেনার নিয়ম
আপনারা যদি ভাল জাতের কবুতর অর্থাৎ ভালো কবুতর চিনতে পারেন তাহলে অবশ্যই খামারের ব্যবসা করে সফল হতে পারেন। বিশেষ করে নতুন ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের অবশ্যই খামার করার আগে ভালো কিছু কবুতর কিনতে হবে অথবা চিনতে হবে। ভালো জাতের কবুতর নির্বাচন করে খামারে বংশবৃদ্ধি করতে হবে। আর এজন্য আমরা এই অংশে ভালো জাতের কবুতর চেনার নিয়ম আলোচনা করব। চলুন কথা না বাড়িয়ে এবার জেনে নেওয়া যাক।
- সাধারণত দেখা গেছে একটি ভালো মানের কবুতরের শরীর সুস্থ থাকবে এবং পালক উজ্জ্বল থাকবে।
- তাছাড়াও কবুতরের চোখের দিকে খেয়াল রাখবেন তাদের চোখ গুলো অনেক পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল থাকতে হবে।
- এছাড়াও কবুতরের নাকের দিকে খেয়াল রাখবেন। ভালো জাতের কবুতরের নাক সবসময় পরিষ্কার থাকে।
- তাছাড়াও আপনারা কবুতরের ঠোঁট ঠিক আছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন কেনার পূর্বে।
- ভালো কবুতর চেনার জন্য কবুতরের পায়ের দিকে খেয়াল রাখবেন দেখবেন কবুতর সঠিকভাবে হাঁটতে পারছে কিনা।
- আরেকটি ভালো জাতের কবুতর চেনার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হল সুস্থ কবুতর সব সময় নড়াচড়া করবে এবং অসুস্থ কবুতর সব সময় চুপচাপ বসে থাকে। তবে এটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।
- আপনি যদি নর কবুতর কিনতে চান তাহলে দেখবেন কবুতরটি সঠিকভাবে ডাকছে কিনা সেটা দেখে কিনবেন।
- আরেকটি ভালো মানের কবুতর তার চোখ সবসময়ই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে। তাদের চোখের দিকে খেয়াল রাখবেন যে চোখ পরিষ্কার আছে কিনা।
আশা করছি আপনারা ভাল জাতের কবুতর চেনার উপায় সহ নিয়ম জেনে গেছেন। যার ফলে আপনারা এখন অতি সহজেই খামার গড়ে তুলতে পারবেন।
কবুতর কত বছর বাঁচে
আপনারা হয়তো জানেন কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় তবে এই বিষয়টিও খুব গুরুত্বপূর্ণ যে ঐ কবুতরটি কত বছর বাঁচে। আপনার অনেকেই এই প্রশ্নটি করে থাকেন কবুতর কত বছর বাঁচে। এ সম্পর্কে আমরা এখন জানানোর চেষ্টা করব। সাধারণত যেগুলো গৃহপালিত কবুতর অর্থাৎ খামারের জন্য লালন পালন করা হয় সেগুলো সাধারণত ১০ থেকে ১৫ বছর বেঁচে থাকতে পারে।
আর যেগুলো জংলি কবুতর বিশেষ করে জঙ্গলে দেখা যায় সেই গুলো সাধারণত ৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। আর যদি কবুতরের যত্ন বিশেষ করে নেওয়া হয় তাহলে সেই কবুতরকে ২০ বছর পর্যন্ত বা তারও বেশি বছর পর্যন্ত বাঁচানো যায়। তাই কবুতরকে সুস্থ রাখুন এবং বেশি দিন বাঁচাতে যত্ন নিন।
কবুতর কত মাস বয়সে ডিম দেয়
আপনারা কি জানেন কবুতর কত মাস বয়সে ডিম দেয়। যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই অংশ জানতে পারবেন। সাধারণত একটি মাদি কবুতর অর্থাৎ স্ত্রী কবুতর ৫ থেকে ৬ মাস বয়সেই ডিম দিয়ে থাকে। আর একবার ডিম দেওয়া শুরু হলে প্রতি মাসেই ডিম দিতে থাকে। তাই এর থেকে বলা যায় কবুতর সাধারণত প্রতি মাসেই ডিম দিয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ প্রতিদিন কয়টা কাঠ বাদাম খাওয়া উচিত
তবে সাধারণত কবুতর ডিম দিতে দিতে এক সময় ডিম দেওয়া কম করে দেয় অর্থাৎ তারা ডিম দেওয়ার ক্ষমতা আস্তে আস্তে হারিয়ে ফেলে। তবে জানা যায় কবুতর সাধারণত শেষ বয়স পর্যন্ত অল্প হলেও কিছু ডিম দিয়ে থাকে অর্থাৎ কবুতর শেষ বয়স পর্যন্ত ডিম দিতে থাকে।
কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়
আমরা যারা নতুন কবুতর লালন পালন করতে চাই তাদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কবুতরকে কি খাওয়ালে তারা বেশি ডিম দেয় এবং খুব তাড়াতাড়ি দেয় সে বিষয়টি জানা প্রয়োজন। আমরা এ সম্পর্কে এখন বিস্তারিত আলোচনা করব যে কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়।
আমরা সাধারণত কবুতরকে শস্য জাতীয় দানাাদার খাদ্য খাওয়ায়ে থাকি। যেমন ভুট্টা , চাউল , সরিষা , রাইন সরিষা ইত্যাদি সহ অনেক ধরনের খাদ্য দিয়ে থাকি। তবে আপনাদের অবশ্যই জানতে হবে কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয় এ সম্পর্কে আমরা নিম্নে কিছু খাবার তুলে ধরব যেগুলো খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দিবে।
ই কাপ ক্যাপসুলঃ আপনাদের সাধারণত এই ক্যাপসুল সপ্তাহে নিয়ম অনুযায়ী দুই দিন খাওয়াতে পারেন। অবশ্যই খালি পেটে খাওয়াতে হবে। তবে মনে রাখবেন প্রতিদিন কখনোই খাওয়াবেন না। প্রতি দিন খাওয়ালে কবুতর ডিম দিবে কিন্তু সেই ডিম থেকে বাচ্চা ফুটবে না অর্থাৎ কবুতর বাচ্চা ফোটাবে না। শুধু ডিমই দিতে থাকবে। তাই নিয়ম অনুযায়ী খাওয়াবেন।
ডিমের খোসাঃ আপনি কবুতরকে ডিমের খোসা গুড়ো করে খাওয়াতে পারেন। এটি খাওয়ালে কবুতর খুব তাড়াতাড়ি ডিম দিবে এবং কবুতরের ডিমের খোসা শক্তিশালী হবে। ফলে ডিম সুস্থ সম্মত হবে। তাই অন্যান্য খাবারের সাথে আপনারা কবুতরকে ডিমের খোসা খাওয়াতে পারেন।
গ্রিডঃ তাছাড়া আপনারা কবুতরকে গ্রিড খেতে দিতে পারেন। কবুতর সাধারণত এই গ্রিড পছন্দ করে থাকে ফলে তারা এটি খেয়ে থাকে। তাই আপনারা কবুতরের স্বাস্থ্যের জন্য গ্রিড খাওয়াতে পারেন অন্যান্য খাবারের সাথে।
কচি গাছঃ আপনার হয়তো অনেকে দেখে থাকবেন কবুতর সাধারণত যখন আকাশে উড়ে বেড়ায় তখন বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে কচি কচি গাছের পাতা খেয়ে থাকে। যেটি কবুতর পছন্দ করে। আপনারা বিভিন্ন ধরনের কচি কচি গাছের পাতা কবুতরকে খাওয়াতে পারেন। তাছাড়াও কচিপাতা হিসেবে মিষ্টি কুমড়া গাছের পাতা , পুঁইশাকের পাতা , পুঁইশাক গাছের ফল সহ যে গাছগুলোগুলো কচি কচি পাতা দিয়ে থাকে সেগুলো খাওয়াতে পারেন। এতে করে কবুতর অনেক পুষ্টি পাবে।
নোনতা মাটিঃ আপনারা কি জানেন কবুতর সাধারণত নোনতা ধরনের মাটি খেতে পছন্দ করে। আপনারা যদি খামারে খাচায় কবুতরকে লালন-পালন করেন তাহলে কবুতরকে নোনতা মাটি খাওয়াতে পারেন। আর যদি এমনি ছাড়া অবস্থায় কবুতর লালন পালন করে থাকেন তাহলে সেই কবুতর নিজে থেকেই মাটি খুঁজে বের করে খাবে।
এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার এবং ফিড পাওয়া যায় যেগুলো খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়। আপনার এগুলো বিভিন্ন পশুপাখির দোকানে পেয়ে যাবেন।
কিছু কবুতরের জাতের নাম
বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন যাদের কবুতর রয়েছে। যাদের একেক কবুতরের নাম এক এক রকম। এসব যাদের কবুতরগুলো ব্যবসায়ীরা লালন পালন করে আসে। চলুন আমরা এখন কিছু কবুতরের জাতের নাম জেনে আসি।
গিরিবাজ কবুতরঃ আপনার আগে জেনে গেছেন হয়তো গিরিবাজ কবুতর বেশি বাচ্চা দেওয়ার জন্য অধিক জনপ্রিয়। তবে গিরিবাজ কবুতর দুই ভাগে বিভক্ত। যথাঃ সাধারন গিরিবাজ কবুতর ,হাইফ্লায়ার গিরিবাজ জাত এই দুইটি ভাগে বিভক্ত।
দেশি কবুতরের জাতঃ আমরা দেশী জাতের তিনটি কবুতরের নাম তুলে ধরেছি। চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক। প্রথম কবুতরটির নাম গোলা , আর দ্বিতীয় জাতের কবুতরের নাম দেশি গিরিবাজ এবং তৃতীয় জাতের কবুতরের নাম হল জালালী কবুতর।
ময়ূরপঙ্খী অথবা লাক্কা জাতঃ এই কবুতর গুলো দেখতে অনেকটা ময়ূরের মত অর্থাৎ এই কবুতরের পাখনা গুলো ময়ূরের পাকনার মতো ফোলানো থাকে। এ ধরনের কবুতরগুলো সাধারণত কবুতর পছন্দ করে এমন ব্যক্তিরা লালন পালন করে থাকে। তারা শখের বসে এই কবুতরগুলো লালন পালন করে। এই কবুতরগুলো সাধারণত কবুতর থেকে অনেক বেশি দামি। কারণ এই কবুতরের সৌন্দর্য অন্যান্য কবুতর থেকে বেশি।
গোলা কবুতরঃ বেশি জাতের কবুতরের মধ্যে এটি একটি অন্যতম জনপ্রিয় কবুতর। যেটি প্রায় সকল গৃহপালিত বাড়িতে দেখা যায় লালন পালন করতে। এটি ছাড়া অবস্থায় লালন-পালন করা যায়। এই কবুতরগুলো মুরগির মত লালন পালন করা যায়। এরা নিজে থেকে আবার বাসস্থানে চলে আসে মুরগির মত।
কবুতর সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর(FAQ)
বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি কবুতর কোনটি?
উত্তরঃ বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বর্তমানে দামি কবুতর হচ্ছে ভিক্টোরিয়া ক্রাউন। এই কবুতরটির মূল্য বর্তমানে একজোড়া ৮ লক্ষ টাকার উপরে।
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়?
উত্তরঃ সাধারণত গিরিবাজ কবুতর এবং জালালী কবুতর ও ফেন্সিন কবুতর বেশি বাচ্চা দিয়ে থাকে।
কত জাতের কবুতর আছে?
উত্তরঃ পৃথিবীতে সাধারণত ১২০ প্রজাতিরও বেশি কবুতর রয়েছে। তবে বাংলাদেশের বর্তমানে ২০ প্রজাতির কবুতর রয়েছে।
কবুতরের বাচ্চার চোখ ফোটে কত দিনে?
উত্তরঃ সাধারণত ডিম পাড়ার পর কবুতরের ডিম ফোটার পর বাচ্চার চোখ ৫ থেকে ৬ দিন পর ফোটে যায়।
শেষ কথা
আশা করি দিয়ে পাঠক আপনারা হয়তো এতক্ষণে কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দিয়ে থাকে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এছাড়াও কবুতরের ডিম পাড়ে লক্ষণ সহ কবুতর কিভাবে ডিম দেয় ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারলেন। আপনি যদি কবুতরের ব্যবসা করে লাভবান হতে চান তাহলে অবশ্যই ভালো মানের কবুতর নির্বাচন করতে হবে যা আমরা আজকের পোস্টটিতে আলোচনা করেছি। আশা করছি ভালো লেগেছে।