১ লাখ টাকায় ব্যবসা করার ১০টি আইডিয়া

১ লাখ টাকায় ব্যবসা করার প্রচুর আইডিয়া রয়েছে, ১ লাখ টাকা পুঁজি দিয়ে ছোট আকারের ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। যারা মাঝারি আকারের ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন তারা এক লাখ টাকায় ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আমরা আর্টিকেলে ১০টি ব্যবসার আইডিয়া তুলে ধরার চেষ্টা করলাম যা আপনি ১ লাখ টাকায় শুরু করতে পারবেন।

১ লাখ টাকায় ব্যবসা করতে চান তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এক লাখ টাকায় ব্যবসা করার বেশ কিছু জনপ্রিয় উপায় রয়েছে যা জানলে আপনি সহজেই এক লাখ টাকা ইনভেস্ট করে ব্যবসা করে আয় করতে পারবেন। অনেক উপায় পাবেন যেগুলোতে এক লাখ টাকা ইনভেস্ট করে ব্যবসা করলে বেশি লাভ করা যায়, আর সেই উপায়গুলোই আমরা আপনাদের জানিয়ে দেবো। তাই চিন্তা না করে এখনই ১ লক্ষ টাকা নিয়ে ব্যবসা করার আইডিয়াগুলো জেনে নিন।

১ লাখ টাকায় ব্যবসা করার ১০টি আইডিয়া

যারা অল্প পুঁজিতে মাত্র ১ লক্ষ টাকায় ব্যবসা শুরু করতে চান তারা আমাদের এই অংশটি ভালো করে পড়ুন। এখানে ১ লাখ টাকায় ব্যবসা করার ১০টি আইডিয়া গুলো তুলে ধরা হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ১ লাখ টাকায় ব্যবসা আইডিয়াগুলো সম্পর্কে।

১. অনলাইন পোশাক ব্যবসা

অনলাইন পোশাকের ব্যবসাটি আপনি মাত্র এক লক্ষ টাকা দিয়ে শুরু করতে পারবেন। এক লক্ষ টাকা দিয়ে ব্যবসার করতে হলে অনলাইন পোশাক ব্যবসা শুরু করুন। বর্তমানে অনলাইনে কেনাকাটার বিষয়টি অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বেশিরভাগ মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করতে পছন্দ করে।

আরো পড়ুনঃ মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায়

আরো পড়ুনঃ মাসে ৫০০০০ টাকা আয় করার উপায়

এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আপনি অনলাইন স্টোর খুলে সেখানে পোশাক বিক্রি করে আয় করতে পারবেন। আপনি লোকাল মার্কেট থেকে সাশ্রয়ী দামে পোশাক কিনে এনে অনলাইন প্লাটফর্মে বিক্রি করতে পারবেন। আপনি অনলাইন প্লাটফর্ম হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন। অনলাইন পোশাকের ব্যবসা করার জন্য যা যা প্রয়োজনঃ

  • প্রথমেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে আপনার অনলাইন স্টোর খুলবেন। এক্ষেত্রে আপনি ফেসবুক পেজ ব্যবহার করতে পারেন।
  • এবার আপনারা কাজ হবে অনলাইনে পোশাকের রিভিউ বানিয়ে গ্রাহকদের জানানো। ভালোভাবে আকর্ষণীয় রিভিউ বানিয়ে গ্রাহকদের জানাবেন।
  • আকর্ষণীয় ডিজাইনের পোশাক গুলো সংগ্রহ করবেন, আর মনে রাখবেন পোশাকের ভালো কোয়ালিটি হলো আপনার ব্যবসার সফল হওয়ার মূল মন্ত্র। অর্থাৎ পোশাকের কোয়ালিটি ভালো হলে গ্রাহকরা বেশি কিনতে আগ্রহী হয়।
  • আপনি পাইকারি বাজার থেকে কোয়ালিটি সম্পন্ন পোশাক ক্রয় করে এনে অনলাইন প্লাটফর্মে বিক্রি করবেন।
  • আপনি যেহেতু অনলাইনে ব্যবসা করবেন সে ক্ষেত্রে অনলাইনে গ্রাহকদের কাস্টমার সাপোর্ট দেওয়ার জন্য কমিউনিকেশন স্কিল উন্নত করবেন।
  • গ্রাহকদের প্রোডাক্ট যত সময়ে ডেলিভারি দেওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে গ্রাহকরা খুশি হবে এবং বেশি বেশি আপনার থেকে পণ্য বা প্রোডাক্ট ক্রয় করবে।
আরো পড়ুনঃ  টাকা ছাড়া ব্যবসা করার উপায় ও ইনভেস্ট ছাড়া ব্যবসা

২. ফাস্ট ফুড বা স্ন্যাকস শপ

মাত্র এক লক্ষ টাকায় ফাস্ট ফুড বা হালকা খাবারের একটি দোকান দিয়ে শুরু করতে পারেন। ছোট পরিসরে হ্যান্ডমেড স্ন্যাকস বা চপ, সিঙ্গারা, রোল ইত্যাদি বিক্রি করতে পারবেন। বর্তমানে ফাস্টফুড খাদ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যুবক যুবতীরা এই ধরনের ফাস্টফুড খাবার গুলো বেশি পছন্দ করে থাকে।

তাই আপনি বাজারে এলাকায় ফাস্টফুডের দোকান দিয়ে সেখানে আকর্ষণীয় ফাস্টফুড তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। ফাস্টফুড এর দোকানটির লোকেশন বাজারে এলাকা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এলাকায় হলে বেশি ইনকাম করা যাবে। খাবারের কোয়ালিটি ভালো রাখবেন এবং আকর্ষণীয় করে বানাবেন তাহলেই এক লক্ষ টাকায় ফাস্টফুড ব্যবসা করে সফল হতে পারবেন।

৩. বিউটি স্যালন বা হোম সার্ভিস

আপনি বাড়ির আশেপাশে ছোট একটি বিউটি সেলুন খুলতে পারেন। যেখানে আপনি গ্রাহকদের বিউটি সম্পর্কিত সেবাগুলো প্রদান করতে পারবেন। তাছাড়া অনলাইনে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে হোম সার্ভিস পর্যন্ত দিতে পারবেন। অনেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বাড়িতে বিউটি সম্পর্কিত কাজের জন্য হোম সার্ভিস নিয়ে থাকে।

আপনার যদি মেকআপ সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে এই কাজটি করে সহজেই টাকা আয় করতে পারবেন। পাশাপাশি নিজের একটি বিউটি পার্লার খুলে সেখানে প্রতিদিন ৫০০ টাকার আয় করতে পারবেন।১ লাখ টাকায় ব্যবসা করতে হলে বিউটি পার্লার হতে পারেন।

৪. মোমবাতি বা সাবান তৈরি

ঘরে বসে মাত্র ১ লক্ষ টাকা দিয়েই আকর্ষণীয় মোমবাতি বা সাবান তৈরির ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে।ঘরে বসে বিভিন্ন ধরনের মোমবাতি বা হ্যান্ডমেড সাবান তৈরি করে বিক্রি করুন। আপনি প্রোডাক্টগুলো বিক্রি করার জন্য অনলাইন মাধ্যম বেছে নিতে পারেন।

আপনার মোমবাতি বা সাবানগুলোতে আকর্ষণীয়ভাবে ডিজাইন করে সুগন্ধি ব্যবহার করে ইউনিক করে তৈরি করতে পারেন। এতে গ্রাহকদের চাহিদা বেড়ে যাবে, যার ফলে আপনার মোমবাতি ও সাবান বেশি বিক্রি হবে। আর আপনি এক লক্ষ টাকায় এই ব্যবসাটি করে সফল হতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ  উৎপাদনমুখী ব্যবসা ৫০০০ টাকায় করুন জনপ্রিয় ১০টি উপায়ে

৫. গ্রাফিক ডিজাইন ও প্রিন্টিং সার্ভিস

আপনাদের মধ্যে যারা গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজে দক্ষ তারা চাইলে দোকান ভাড়া নিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইন ও প্রিন্টিং সার্ভিস দিতে পারেন। বিশেষ করে যারা ডিজাইন করতে পারেন, তারা কম্পিউটার ও প্রিন্টার ব্যবহার করে ভিজিটিং কার্ড, ফ্লায়ার, লিফলেট প্রিন্টিং ব্যবসা করতে পারেন। এই ব্যবসাটি আপনি এক লক্ষ টাকায় শুরু করতে পারেন।

১ লাখ টাকায় ব্যবসা করার ১০টি আইডিয়া সময়ের মধ্যে এটি আমার কাছে সবচেয়ে সহজ মনে হয়েছে। গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজটি আপনি অনলাইনে ফ্রিতে করতে পারবেন আবার নিজেই দোকান দেওয়ার মাধ্যমে সেখানে বিভিন্ন পোস্টার ডিজাইন , লোগো ডিজাইন , ব্যানার ডিজাইন , লিফলেট ডিজাইন , প্রোডাক্ট প্যাকেট ডিজাইন ইত্যাদি কাজগুলো করে ইনকাম করতে পারবেন।

৬. হোম টিউশন বা কোচিং সেন্টার

সামান্য টাকা খরচ করে নিজ বাসাতেই আপনি স্টুডেন্টদের পড়ানোর জন্য কোচিং সেন্টার খুলতে পারেন। তাছাড়া সরাসরি প্রাইভেট সেন্টার খুলে আয় করতে পারবেন। প্রথমেই একটি ঘর ভাড়া নিবেন, সেখানে স্টুডেন্টদের বসার জন্য বেঞ্চ ও টেবিল সংগ্রহ করবেন। এতে আপনার সামান্য কিছু টাকা খরচ হতে পারে।

পাশাপাশি স্টুডেন্টদের পড়া বোঝানোর জন্য ব্ল্যাকবোর্ড বা হোয়াইট বোর্ড ব্যবহার করবেন। এভাবে আপনি প্রাইভেট টিউশন সেন্টার খুলে বা কোচিং সেন্টার খুলে ব্যবসা করে ভালো টাকা আয় করতে পারবেন। এই ব্যবসাটি করতে ১ লক্ষ টাকা লাগবে না, আপনি ৫০০০০ টাকা খরচ করে করতে পারবেন।

৭. মোবাইল ফোন অ্যাক্সেসরিজের ব্যবসা

বাজারের জন্য সমাগম এলাকায় ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে মোবাইল ফোন অ্যাক্সেসরিজ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসাটি আপনি ১ লক্ষ টাকা দিয়ে খুব সহজে শুরু করতে পারবেন। আর এক লক্ষ টাকা দিয়ে শুরু করে অনেক লাভজনক ব্যবসা হিসেবে দাঁড় করানো যাবে।

আপনি দোকানে মোবাইল ফোন অ্যাক্সেসরিজ সম্পর্কিত যাবতীয় মোবাইল কেস, চার্জার, ইয়ারফোন, প্রটেক্টর ইত্যাদি দোকানে রাখবেন। আর গ্রাহকদের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করবেন তাহলেই মোবাইল এক্সেসরিজ ব্যবসা লাভজনক হবে।

আরো পড়ুনঃ  জনপ্রিয় ১০টি উপায়ে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা করুন ২০২৪

৮. গিফট শপ বা কাস্টমাইজড গিফট আইটেম

বর্তমানে অনেকেই প্রিয়জনদের গিফট করার জন্য অনলাইন থেকে কাস্টমাইজ গিফট ক্রয় করে থাকে। আপনার যদি গিফট তৈরি করার বিশেষ দক্ষতা থাকে বা সৃজনশীলতা থাকে তাহলে এই গিফট শপ দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

কাস্টমাইজ গিফট আইটেমগুলো বানিয়ে আপনি অনলাইন ও অফলাইন দুই মাধ্যমেই ইনকাম করতে পারবেন। কাস্টমাইজ গিফট আইটেম হিসেবে কাস্টমাইজড মগ, টি-শার্ট, পিলো কভার ইত্যাদি তৈরি করতে পারেন। বিশেষ করে মোবাইল ফোনের ব্যাক কভার এর ডিজাইন তৈরি করতে পারেন।

৯. হস্তশিল্প বা হাতের কাজের ব্যবসা

মাত্র এক লক্ষ টাকা দিয়ে হস্তশিল্প বা হাতের কাজের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।নিজ হাতে তৈরি গহনা, ডেকোরেশন আইটেম, বা হস্তশিল্পের অন্যান্য জিনিস বিক্রি করে লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। অনেকের বিশেষ সৃজনশীল ক্ষমতা থাকে, আপনার যদি হাতের কাজের দক্ষতা বা সৃজনশীল ক্ষমতা থাকে তাহলে হস্তশিল্প সম্পর্কিত যেমন কাস্টমাইজড গহনা তৈরি, গিফট আইটেম, ডেকোরেশন আইটেম ও অন্যান্য জিনিসপত্র তৈরি করে ব্যবসা করে আয় করতে পারবেন।

১০. বাচ্চাদের খেলনা বিক্রি

১ লাখ টাকায় ব্যবসা শুরু করে লাভ করতে চান, তাহলে বাচ্চাদের খেলনার দোকান দিয়ে শুরু করতে পারেন। অনেকেই বর্তমানে বাচ্চাদের খেলনা বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছে, এতে করে ভালো লাভ করা যায়। এই ব্যবসাটি করে খুব সহজেই সফল হতে পারবেন। ছোট বাচ্চারা প্রায় খেলনা কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে। আপনি দোকানে বিভিন্ন আকর্ষণীয় খেলনা সংগ্রহ করে গ্রাহকদের বা বাচ্চাদের আকর্ষণ করতে পারেন। তাছাড়াও বাচ্চারা পছন্দ করে এমন খেলনা গুলো কম খরচে কিনে বিক্রি করতে পারেন।

সর্বশেষ কথা

আজকের আর্টিকেলে স্টেপ বাই স্টেপ ১ লাখ টাকায় ব্যবসা করার ১০টি আইডিয়া সম্পর্কে ভালোভাবে জানিয়ে দিয়েছি। যারা এক লক্ষ টাকায় ব্যবসা করতে যান আর্টিকেলটি পড়লেই উপায়গুলো জেনে যাবেন। ব্যবসা করে সফল হতে হলে সঠিক কলা কৌশল অবলম্বন করে চলতে হয়, বিশেষ করে যেই ব্যবসাটি করবেন সেই ব্যবসা সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করে শুরু করলেই সফল হবেন। তাই ব্যবসা করার পূর্বে ব্যবসা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করুন। আর এই ধরনের তথ্যবহুল আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত ভিজিট করুন।

Leave a Comment