বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত ও বিকাশ এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া দেখে নিন

বিকাশ এজেন্ট হয়ে কমিশন নিয়ে আয় করতে চাচ্ছেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে। বিকাশ এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন করার কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে যা আমরা আর্টিকেলে দেখিয়ে দেব। এছাড়াও যারা কমিশন নিয়ে আয় করতে চান,

তাদের অবশ্যই বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত তা জেনে রাখা উচিত। বিকাশের এজেন্ট হয়ে কত কমিশন পাওয়া যায় এবং কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করে ইনকাম করবেন তা পুরো আর্টিকেলের মাধ্যমে দেখানো হবে। 

বর্তমান সময়ে অনেকেই ব্যবসা করার চিন্তা করে থাকে, আর এর মধ্যে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসাটি অন্যতম। বিকাশের এজেন্ট হয়েও যে ব্যবসা করা যায় এই সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। বিকাশের এজেন্ট হয়ে বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করা যায়।

আরো পড়ুনঃ ডাচ বাংলা ব্যাংক রকেট লাইভ চ্যাট করার নিয়ম

আরো পড়ুনঃ বিকাশ ক্যাশ আউট চার্জ কত

বর্তমানে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ বিকাশ ব্যবহার করে থাকে। যার কারণে বিকাশ এজেন্ট হয়ে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট ব্যবসাটি করা যায়। বিকাশের মাধ্যমে আরেকজন টাকা লেনদেন করে থাকে আবার ক্যাশ আউট ও অ্যাকাউন্টে ক্যাশ ইন করে থাকে।

আর একাউন্টে ক্যাশ ইন বা ক্যাশ আউট করার জন্য বিকাশ এজেন্ট পয়েন্টে যেতে হয়। আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট হন তাহলে বিকাশ ক্যাশ আউট সার্ভিস দিয়েই টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে বিকাশ এজেন্ট হয়ে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট করলে কত টাকা কমিশন পাওয়া যায় তা সম্পর্কে আমরা আর্টিকেলে জানানোর চেষ্টা করব। বিকাশ এজেন্ট কমিশন সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন। 

বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা বা শর্ত

বিকাশ এজেন্ট হিসেবে নিবন্ধিত হতে হলে কিছু যোগ্যতা বা শর্ত পূরণ করতে হয়। নিম্নে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও শর্তাবলী তুলে ধরা হলোঃ

ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানঃ বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে অবশ্যই নিজস্ব বা ভাড়াকৃত একটি দোকান থাকতে হবে। মূল কথা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে। আর দোকানটি বাজারের জনবহুল স্থানে হলে উত্তম হয়।

ট্রেড লাইসেন্সঃ এবার আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। আপনি দোকান নিয়ে যে ধরনের ব্যবসা করেছেন তার একটি ট্রেড লাইসেন্স এর প্রয়োজন হবে। এটি আপনারা ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। 

আরো পড়ুনঃ  ইউরোপের ধনী দেশের তালিকা ও ইউরোপের ২৬ টি দেশের নাম ২০২৪

টিন সার্টিফিকেটঃ বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য টিন সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হয়। তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) থেকে ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (TIN) সার্টিফিকেট সংগ্রহ করুন।  

সিম কার্ডঃ আপনার নিজের নামে নিবন্ধিত একটি প্রিপেইড সিম থাকতে হবে, আর এমন সিম ব্যবহার করবেন যেটি পূর্বে কোনো বিকাশ একাউন্টের সাথে সংযুক্ত নয়। 

এছাড়াও বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো হলোঃ

  • জাতীয় পরিচয় পত্রের রঙিন ফটোকপি
  • ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
  • টিন সার্টিফিকেটের কপি
  • ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সের কপি

উল্লেখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো থাকলেই আপনি বিকাশ এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। 

বিকাশ এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া

আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট হয়ে ব্যবসা করতে চান তাহলে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে। আর বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো এখন আমরা জানিয়ে দেবো। নিম্নে বিকাশ এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া গুলো দেখানো হলোঃ

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনি তিনটি পদ্ধতিতে আবেদন করতে পারেন। 

  • বিকাশ সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভের (SR) মাধ্যমেঃ আপনার নিজ এলাকায় বিকাশ SR রিপ্রেজেন্টেটিভের এর সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে আবেদন করতে পারেন। 
  • ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের মাধ্যমেঃ আপনার এলাকায় নিকটস্থ বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে সরাসরি গিয়ে আবেদন ফরম জমা দিতে পারেন।
  • অনলাইনেঃ এছাড়াও সরাসরি বিকাশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করে আবেদন করতে পারেন। 

আপনারা সহজেই ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে সরাসরি গিয়ে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলে নিতে পারেন। তবে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো সাথে নিয়ে যাবেন। আমরা ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো কোন গুলো লাগে তা জানিয়ে দিয়েছি। পাশাপাশি বিকাশ এসার রিপ্রেসেন্টেটিভ এর সাহায্য নিয়েও বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে পারেন।

আমরা এখন অনলাইনের মাধ্যমে বিকাশ এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি দেখিয়ে দেব। অনলাইনে আপনি বিকাশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে সরাসরি রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করে আবেদন জমা দিতে পারবেন। নিম্নে পদ্ধতিটি অনুসরণ করুন।

  • সরাসরি বিকাশ অফিসের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা যায়। 
  • সর্বপ্রথম বিকাশ অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
  • সেখান থেকে বিকাশ এজেন্ট সাইন আপ ফর্ম অপশনটিতে ক্লিক করুন। 
  • আবেদন ফরমে ক্লিক করলেই, একটি অনলাইন আবেদন ফরম চলে আসবে।
  • এখানে প্রথমে আবেদন ফরমে দোকানের নাম লিখতে হবে।
  • এরপর জেলা ও এলাকা নির্বাচন করবেন।
  • “যোগাযোগ করবেন যার সাথে” এখানে আপনার নাম লিখবেন।
  • এরপর নিচের দিকে নম্বরে আপনার নম্বরটি দিয়ে দিবেন।
  • আর ইমেইল থাকলে ইমেইল লিখুন।
  • এরপর নিচের দিকে ট্রেড লাইসেন্স নম্বর লেখার বক্স পাবেন। যেখানে ট্রেড লাইসেন্স এর নাম্বার লিখতে হবে।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র থাকলে হ্যাঁ বাটনে ক্লিক করবেন।
  • এরপর ক্যাপচা পূরণ করে জমা দিন বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার বিকাশ এজেন্ট আবেদন জমা হয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ  কোন ব্র্যান্ডের গুড়া দুধ ভালো ও বাচ্চাদের দুধ কোনটা ভালো দেখে নিন

যদি আপনি এই পদ্ধতিতে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট আবেদন করতে না পারেন সেক্ষেত্রে সরাসরি বিকাশের এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করে সাহায্য নিয়ে আবেদন করতে পারেন। 

বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত

বিকাশ এজেন্ট হয়ে ব্যবসা করে কত কমিশন লাভ করা যায় তা অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন। তাই আমরা এখানে বিকাশ এজেন্ট কমিশন সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করলাম।লেনদেনের উপর ভিত্তি করে বিকাশ এজেন্টরা কমিশন পান।

বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করে লেনদেন করলে প্রতি ১,০০০ টাকায় ৪.৩০ টাকা কমিশন পাওয়া যায়। তবে, যদি এজেন্টরা তাদের মোট লেনদেনের ৯০% বা তার বেশি বিকাশ এজেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে সম্পন্ন করেন,

তাহলে অতিরিক্ত বোনাস হিসেবে প্রতি ১,০০০ টাকায় আরও ০.২০ টাকা কমিশন পাবেন। অন্যদিকে, USSD কোড (*247#) ব্যবহার করে লেনদেন করলে প্রতি ১,০০০ টাকায় ৪.১০ টাকা কমিশন প্রদান করা হয়।

এছাড়াও বিকাশের নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে কাজ করলে মাস শেষে এক্সট্রা ইনসেনটিভ লাভ পাওয়া যায়। বিকাশ এজেন্ট কমিশন যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। তাই সময়ের সাথে সাথে আপডেট থাকতে বিকাশের অফিশিয়াল সাইটে ভিজিট করে কমিশন দেখে নিন। 

বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে? 

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কোনো ফি নেই। তবে, ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রাথমিকভাবে এজেন্ট একাউন্টে এবং ক্যাশ হিসেবে কিছু অর্থ রাখতে হবে। এটি সম্পূর্ণ পরিপূর্ণভাবে আপনার উপর নির্ভর করবে। 

  • গ্রামাঞ্চলঃ এজেন্ট একাউন্টে ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা এবং ক্যাশ হিসেবে ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা রাখতে পারেন। 
  • শহরাঞ্চলঃ শহরাঞ্চলে যেহেতু বিকাশের লেনদেন বেশি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বিকাশ এজেন্ট একাউন্টে বেশি টাকা রাখা উচিত। এজেন্ট একাউন্টে ১,০০,০০০ টাকা বা তার বেশি এবং ক্যাশ হিসেবে প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ রাখবেন। 

সর্বশেষ এক কথায় বলা যায় বিকাশ এজেন্ট হতে কোন টাকা খরচ হয় না বা টাকা লাগেনা। আপনার সকল কাগজপত্র থাকলে আপনি বিনামূল্যে বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর বিকাশ এজেন্ট আবেদন সম্পন্ন হলেই সব কিছু কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলে বিকাশ এজেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবেন। আর বিকাশ এজেন্ট হয়ে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট ব্যবসা করে কমিশন নিয়ে লাভ করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ  আমলকি সিরাপ খেলে কি মোটা হওয়া যায়

বিকাশ এজেন্ট কমিশন

বিকাশ এজেন্ট হয়ে কাজ করলে কমিশন নিয়ে লাভ করতে পারবেন। যার কারণে বর্তমানে কমবেশি সকলেই বিকাশ এজেন্ট হয়ে ব্যবসা শুরু করছে। বিকাশ বাংলাদেশ অন্যতম জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। কোটি কোটি মানুষ এই বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টাকা লেনদেন করে থাকে। আর টাকা লেনদেন করার জন্য বিকাশ এজেন্টের প্রয়োজন হয়ে থাকে।

আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট হন তাহলে গ্রাহকদের টাকার লেনদেনের সাহায্য করে অথবা ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট সার্ভিস দিয়ে কমিশন নিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন। বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত হয়ে থাকে তা অনেকেরই অজানা রয়েছে। বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন নিম্নে দেখানো হলোঃ 

বিকাশ এজেন্ট app থেকেরেগুলার কমিশন রেট
প্রতি ১ হাজার টাকা ক্যাশ ইন হলে৪.৩০ টাকা

USSD Code ডায়াল করে বিকাশ এজেন্ট কমিশন

যে সকল বিকাশের এজেন্ট ইউএসএসডি কোড ডায়াল করে বিকাশ ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট সার্ভিস প্রদান করেন তাদের ক্ষেত্রে কমিশন rate ভিন্ন হয়ে থাকে। 

USSD Code *247# ডায়াল করেরেগুলার কমিশন রেট
প্রতি ১০০০ টাকা ক্যাশ ইন হলে৪.১০ টাকা

আর বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা কমিশন যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। এটি বিকাশ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত। কমিশন সম্পর্কে সব সময় আপডেট থাকার জন্য বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করবেন অথবা অফিসিয়াল সাইটে দেখবেন।

উপসংহার

আজকের আর্টিকেলটিতে বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত ও বিকাশ রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যারা বিকাশের এজেন্ট হয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই কমিশন সম্পর্কে জেনে নিবেন। আর কিভাবে একাউন্ট খোলা যায় তা যদি না জেনে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি পড়ে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিন। আজ এ পর্যন্ত শেষ করছি। দেখা হবে নতুন তথ্য প্রযুক্তি ও অনলাইন ইনকাম বিষয় নিয়ে। 

1 thought on “বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত ও বিকাশ এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া দেখে নিন”

Leave a Comment