প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আপনাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা ২০ পয়েন্ট সম্পর্কে খুঁজে থাকেন। তাদের জন্যই আমরা আজকের এই পোস্টটিতে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা ২০ পয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
আর্টিকেলসূচিপত্রঃবাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা ২০ পয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। প্রায় স্কুল কলেজে পরীক্ষাতে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ্য রচনা আসতে দেখা যায়। এজন্য আপনারা রচনাটি ভাল করে পড়ে মুখস্থ করে নিবেন।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা ২০ পয়েন্ট
ভূমিকা
প্রকৃতির স্বভাব বড়ই বিচিত্র। এই প্রকৃতি যেমন আমাদের আশ্রয় দিয়েছে, ঠিক তেমনি ভাবে আবার কখনো কখনো এই প্রকৃতিই আমাদের আশ্রয় ধ্বংস করে দেয়। প্রকৃতির এই নির্মম রূপটিকে আমরা “প্রাকৃতিক দুর্যোগ” বলে থাকি। ভৌগলিক অবস্থান ও জলবায়ুর কারণে আমাদের প্রায় অনেক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা ও ব্যাপকতার কারণে বর্তমানে বাংলাদেশ দুর্যোগ প্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেশের উন্নয়ন ও উন্নতির ধারা বিঘ্ন হয়।
আরো জানুনঃ ফ্রি টাকা ইনকাম নগদে পেমেন্ট
তাছাড়া প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় ও পরিবেশের শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না, কিন্তু আমরা সকলেই চাইলে কিছু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা কমিয়ে আনতে পারি। এক্ষেত্রে সকলেরই উদ্যোগ নিতে হবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা
প্রতিবছরের প্রায় আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনে থাকে। আমাদের দেশের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলোর মধ্যে রয়েছে ঘূর্ণিঝড়, শিলাবৃষ্টি, ভূমিকম্প, খরা, নদী ভাঙ্গন, বন্যা, টর্নেডো, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি। সাধারণত এই দুর্যোগগুলো বাংলাদেশের প্রধান প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার কারণে দেশের ভয়াবহ ক্ষতি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রধান প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলো সম্পর্কে নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলোঃ
বন্যাঃ বাংলাদেশের প্রধান প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বন্যা অন্যতম। যখন অতিবৃষ্টির কারণে কোন শহর বা গ্রাম পানিতে ডুবে যায় তখন তাকে আমরা বন্যা বলে থাকি। মূলত প্লাবন যখন বিশাল আকার ধারণ করে তখন তাকে বলা হয় বন্যা। আর প্লাবন মূলত বৃষ্টির কারণে হয়ে থাকে। প্রতি বছরে বাংলাদেশ প্রায় বন্যা দেখা দেয়। ভৌগলিক অবস্থান , অতিবৃষ্টি, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, একসময়ে প্রধান নদী সমূহে পানি বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে বন্যা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে ১৯৫২, ১৯৫৪ , ১৯৬৮ ,, ১৯৭৪ , ১৯৮৭ , ১৯৮৮ , ১৯৯৮ ও ২০০৪ সালে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে।
এর মধ্য থেকে ১৯৮৮ সালের বন্যা ছিল খুব ভয়াবহ। এই বন্যায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বিশেষ করে এই বন্যাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল ফসলের। বন্যার কারণে হাজার হাজার কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়াও ঘরবাড়ি, গাছপালা , রাস্তাঘাট ও সেতুর প্রকৃতি ধ্বংস হয়েছিল। রাস্তাঘা ডুবে যাওয়ার কারণে ব্যবসা বাণিজ্য ব্যাপক ক্ষতি দেখা দেয়। যার কারণে ১৯৮৮ সালের বন্যাকে ভয়াবহ বন্যা বলা হয়ে থাকে।
ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসঃ ঘূর্ণিঝড় শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ স্কাইক্লোস থেকে। কোন অল্প পরিসরে হঠাৎ বায়ুর উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে যায় এবং সেখানে নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। তখন চারদিকে শীতল ও ভারী বায়ু প্রবল বেগে ওই নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে এবং ঘুরতে ঘুরতে কেন্দ্রে প্রবেশ করে। এই কেন্দ্রমুখী প্রবল বায়ু প্রবাহকে সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় বলা হয়ে থাকে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের চাপ খুব কম থাকায় কেন্দ্রের কাছাকাছি অঞ্চলে সমুদ্রের পানি ফুলে ওঠে।
আরো জানুনঃ রেফার করে টাকা ইনকাম করুন
আর একেই জলোচ্ছ্বাস বলা হয়। বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড় হওয়ার পাশাপাশি প্রায় জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে এদেশের উপকূলবর্তী এলাকা যেমনঃ বরিশাল , পিরোজপুর , ঝালকাঠি , পটুয়াখালী ,বরগুনা , লক্ষীপুর , চাঁদপুর , নোয়াখালী , ফেনী , চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ইত্যাদি অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস বেশি আঘাত হানে। এসব অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস বেশি হয়ে থাকে। এক পরিসংখ্যানে সূত্র থেকে জানা গিয়েছে ১৯৬০ সাল থেকে শুরু করে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রায়ই পঞ্চাশটির বেশি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আঘাত হেনেছে।
তাছাড়াও ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস ছিল খুবই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কারণ ১৯৭০ সালের প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় ৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। বাংলাদেশের দক্ষিণা অঞ্চলে ১৯৮৫ সালে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল। যার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এই ঘূর্ণিঝড়ে কারণে সেই সময়ে প্রায় দেড় লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারায়। আবার ১৯৯১ সালে এদেশে জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল, যেখানে এদেশের ১৬ টি জেলার ৪৭ টি থানা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এ ধরনের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়েছিল। তাহলে বুঝতেই পারছেন ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস প্রাকৃতিক দুর্যোগটি কতটা ক্ষতিকর।
খরাঃ সাধারণত বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে খরা দেখা দিয়ে থাকে। খরার কারণে নদী-নালা , খাল বিল , ফসলের জমি সকল কিছু শুকিয়ে যায়। কোথাও পানি পাওয়া যায় না। মূলত এই সময়ে দেশের সকল জায়গায় পানির সংকট দেখা দেয়। যখন খরা দেখা দেয় তখন পানির অভাবে গাছপালা শুকিয়ে যায় এবং ফসলের জমিতে ফাটল ধরে। করার সময় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায় যার ফলে নদী-নালা , পুকুর ও খাল বিলের পানি শুকিয়ে যায়।
কালবৈশাখীঃ কালবৈশাখী ঝড় বাংলাদেশের প্রতি বছর হয়ে থাকে। এতে দেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এই কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে গাছপালা , ঘরবাড়ি ভেঙে যায়। তাছাড়াও হাজার হাজার গরু বাছুর ও মানুষ পর্যন্ত মারা যায়। এ সময় মানুষজন ও পশু পাখি অসহায় হয়ে পড়ে। আবার অনেক সময় ঝড়ের সাথে বজ্রপাত বৃষ্টি হয়ে থাকে। এই বজ্রপাতের কারণে অনেক সময় মানুষ বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মারা পর্যন্ত যায়।
নদীভাঙ্গনঃ ভৌগোলিক দিক দিয়ে বাংলাদেশের আয়তন সীমিত। আয়তন সীমিত হওয়ার কারণে এদেশে নদীভাঙ্গন একটি মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দেশে প্রায় অধিকাংশ অঞ্চলে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বড় নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষদের জন্য নদী ভাঙ্গন নিয়ে আসে খুবই দুঃখ ও যন্ত্রণা। নদীর পানির তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার কারণে নদী ভাঙ্গন হয়ে থাকে। তাছাড়া ও গাছপালা নিধন ও মাটি কাটার কারণে এই দুর্যোগটি দেখা দেয়।
আরো জানুনঃ
নদী ভাঙ্গনের কারণে আমাদের দেশে প্রায় ২০০ কোটি টাকার মতো আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। প্রতিবছরের প্রায় ১০ লাখ মানুষ নদী ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষগুলোর ঘরবাড়ি ভেঙে যাচ্ছে এবং নদীতে তা তলিয়ে যাচ্ছে। এই নদী ভাঙ্গনের কারণে বসতবাড়ি , গাছপালা , চাষের জমি এবং অন্যান্য সম্পদের ক্ষতি হয়।
ভূমিকম্পঃ এদেশে অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো ভূমিকম্প বহু শতাব্দী ধরে হয়ে আসছে। বাংলাদেশের সাধারণত উত্তর ও পূর্বাঞ্চল এলাকাগুলো ভূমিকম্প বেশি দেখা দিয়ে থাকে। এই কারণে উত্তর ও পূর্বাঞ্চল এলাকা গুলো ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা বলা হয়। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম , সিলেট , ময়মনসিংহ ও রংপুর জেলাগুলোও ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা গুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কারণে সব অঞ্চলে প্রায় সময় ভূমিকম্প হতে দেখা যায়।
লবণাক্ততাঃ লবণাক্ততাকে এক ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে জমিতে লবণাক্ততা দেখা দিয়ে থাকে। এর ফলে ফসলের জমিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সহজেই লবণাক্ততা এলাকা গুলোতে জমিতে ফসল ফলানো যায় না। যার ফলে সেই এলাকার মানুষগুলো বেশিরভাগ সময় খাদ্য সংকটে ভোগে।
শিলাবৃষ্টিঃ বর্ষাকালে প্রায় শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলোর মধ্যে শিলাবৃষ্টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর কারণ হলো শিলাবৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়ে থাকে। আকাশ থেকে বৃষ্টি হওয়ার সময় বড় বড় বরফের টুকরা পড়াকে শিলাবৃষ্টি বলা হয়ে থাকে। শিলাবৃষ্টি হওয়ার সময় বৃষ্টির সাথে বড় আকারের বরফের টুকরা পড়ে থাকে। এই শিলাবৃষ্টির কারণে বিভিন্ন ধরনের ফসলের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিশেষ করে ধানের মৌসুমে শিলাবৃষ্টি হলে কৃষকদের চাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ধান চারা অবস্থায় যদি শিলাবৃষ্টি হয় তখন ধানের ফলন কমে যায় অর্থাৎ ধানের ফসল অনেক কম হয়।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ
অতিবৃষ্টিঃ কৃষি প্রধান এই দেশে অতিবৃষ্টির কারণে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। আমাদের দেশের প্রায়ই প্রতি বছরেই অতিবৃষ্টি হয়ে থাকে। এই অতিবৃষ্টির কারণে কৃষকদের বেশি ক্ষতি হয়ে থাকে। কারণ অতিবৃষ্টির কারণে ফসলের জমি পানিতে ডুবে যায় এবং সকল ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম কারণ হলো ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূতাত্ত্বিক গঠন। আমাদের দেশের মেঘনা , গঙ্গা ও যমুনা এ প্রধান তিনটি নদী মিলিত স্থানে অবস্থিত রয়েছে একটি বৃহত্তম দ্বীপ, যা মূলত পৃষ্ঠদেশ থেকে ৭ থেকে ৮ মিটার উঁচু। এসব নদীর পানির উৎস হিসেবে রয়েছে তিব্বত , নেপাল ও ভুটান নদীগুলো। বর্ষাকালে অতিবৃষ্টির কারণে যদি এসব নদীতে পানি বেড়ে যায় তখন আমাদের দেশের প্রধান নদী গুলোতে অতিরিক্ত পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে বন্যা দেখা দেয়।
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবঃ সাধারণত আমাদের দেশে বর্ষাকালে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বন্যা হয়ে থাকে। এ সময় বাতাস দক্ষিণ-পূর্ব এলাকা থেকে উত্তর-পশ্চিম দিক এলাকায় প্রবাহিত হয়ে থাকে। যার ফলে নদী গুলোর দক্ষিণ মুখী পানি নিঃসরণ নিয়ে বাধা প্রাপ্ত হয়। যখন আমাদের দেশে অতিবৃষ্টি দেখা যায় তখন বঙ্গোপসাগরে পানি সমতল থেকে তিন থেকে চার ফুট বৃদ্ধি পায় যার কারণে অতিরিক্ত পানি নদীপথের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং বন্যা দেখা যায়। এছাড়াও বঙ্গোপসাগরের চূড়ায় হিমালয় পর্বত রয়েছে। আর এই হিমালয় পর্বতে বরফ জমে থাকার কারণে গ্রীষ্মকালে এই বরফ তাপের কারণে গলে গিয়ে বঙ্গোপসাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়।
সমুদ্রের এই পানিগুলো নদীর মাধ্যমে দেশের স্থলভাগে প্রবেশ করে যার ফলে বন্যার দুযোগটি হয়।তাছাড়াও ভারত ও বাংলাদেশের সীমানায় নদীতে অনেকগুলো বাধ রয়েছে। বিশেষ করে ফারাক্কা বাঁধ রয়েছে, এই বাঁধের কারণে বাংলাদেশের বেশিরভাগ সময়ে বন্যা দেখা যায়। গ্রীষ্মকালে যখন ভারতে খরা দেখা যায় তখন এই বাঁধে পানি আটকে রাখে । আবার বর্ষাকালে অতিবৃষ্টির কারণে ভারতে বন্যা হলে তখন তারা এই বাধ খুলে দেয়, যার ফলে ভারত থেকে প্রচুর পানি বাংলাদেশের নদীতে প্রবেশ করে এবং এদেশে বন্যা সৃষ্টি হয়।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার উপায়
প্রাকৃতিক দুর্যোগ সাধারণত হঠাৎ করেই হয়ে থাকে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করা না গেলেও বিভিন্ন উপায়ে তা মোকাবিলা করা যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার বিভিন্ন রকম উপায় রয়েছে সেগুলো মেনে চললে দুর্যোগ থেকে কিছুটা হলেও ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায়। নিম্নে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মোকাবেলা করার উপায় গুলো তুলে ধরা হলোঃ
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
- দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে কর্মী বাহিনী গড়ে তুলতে হবে।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার জন্য জাতীয় ভিত্তিতে পরিকল্পনা , নীতিমালা ও কর্মপদ্ধতি প্রণয়ন করতে হবে।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা উচিত।
- প্রাকৃতিক আবহাওয়া পরীক্ষা করে দুর্যোগের সতর্ক সংকেত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
- প্রত্যেকটি দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় নিরাপদ স্থান থাকা আবশ্যক। যেমন বন্যা থেকে বাঁচতে হলে সেই এলাকায় একটি উঁচু নিরাপদে স্থান থাকতে হবে।
- যোগাযোগব্যবস্থার সাথে সাথে তথ্য সরবরাহ পদ্ধতি গুলো উন্নত করতে হবে।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ এলাকাগুলোতে আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে।
- সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীকে দুর্যোগের সময় সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে। আর সব সময় সামরিক বাহিনী গুলোকে দুর্যোগে সতর্ক থাকতে হবে।
- দুর্যোগ প্রবণ এলাকাগুলোতে প্রয়োজনীয় খাবারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আর শিক্ষার মাধ্যমে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এর ফলে মানুষ বুঝতে পারবে কিভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়।
এভাবে উপরোক্ত উপায় গুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করা যাবে।
উপসংহার
প্রকৃতির কাছে মানুষ অসহায়। কারণ প্রকৃতিকে মানুষ কখনো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। প্রকৃতি সৃষ্টিকর্তার নিয়ম অনুযায়ী চলতে থাকে। তাছাড়াও মানুষের অসামাজিক কর্মকান্ডের কারণে প্রকৃতিতে দুর্যোগ দেখা দেয়। যেমন গাছ নিধন করা এই কারণে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। পরিবেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করতে হবে। আর অবশ্যই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য সবসময় তৈরি থাকতে হবে। তাহলে আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবো।