স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব ও ঘরে বসে পার্ট টাইম জব আইডিয়া গুলো সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। যারা ঘরে বসে পার্ট টাইম জব করে ইনকাম করতে চান তারা অবশ্যই আর্টিকেলটি ভালো করে পড়বেন, বিশেষ করে স্টুডেন্টরা পার্টটাইম জব আইডিয়াগুলো জানার জন্য পড়বেন। স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব আইডিয়া বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
শিক্ষার্থী বন্ধুরা আপনারা লেখাপড়ার পাশাপাশি পার্টটাইম জব করে ইনকাম করতে পারেন, পার্ট টাইম জব আপনি ঘরে বসে অনলাইনে করতে পারবেন। আবার ঘরের বাইরে অফলাইনে পার্ট টাইম জব করা যায়। তবে সহজ উপায় হলো অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে পার্ট টাইম জব করা। আমরা এই সহজ উপায়টি নিয়েই গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করব। স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব কি কি হতে পারে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানানো চেষ্টা করব।
স্টুডেন্টদের পার্ট টাইম জব করা কেন প্রয়োজন?
ছাত্র জীবনে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর টাকার প্রয়োজন হয়ে থাকে, বিশেষ করে এই সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে টাকার স্বল্পতা থাকে। কারণ মাতা পিতারা পড়াশোনা খরচ চালানোর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা হিসাব করে সন্তানদের দিয়ে থাকে। যার কারণে ছাত্রছাত্রীরা শুধুমাত্র পড়াশোনার ক্ষেত্রে খরচ করতে পারে। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা খরচ থেকে বাড়তি কোনো খরচ করতে পারে না।
এজন্য প্রতিটি স্টুডেন্টদের উচিত পড়াশোনা করার পাশাপাশি পার্টটাইম জব করা। পার্ট টাইম জব যেকোনো ভাবে করা যাবে। পার্ট টাইম জব ঘরে বসে করতে পারবেন, আবার ঘরের বাইরে গিয়েও বিভিন্ন শপে করতে পারবেন। শিক্ষার্থী বন্ধুরা আপনারা যদি পড়াশোনা খরচ চালানোর পাশাপাশি বাড়তি খরচ করতে চান তাহলে অবশ্যই পার্ট টাইম জবের দিকে অগ্রসর হতে হবে।
আরো পড়ুনঃ দিনে ৫০০ টাকা ইনকাম করার অ্যাপস গুলো দেখে নিন
আরো পড়ুনঃ মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করার সহজ উপায়
কারণ পার্টটাইম জব করে টাকা ইনকাম করে বাড়তি খরচ করতে পারবেন। এছাড়াও এমন অনেক পরিবার রয়েছে যারা সন্তানদের পড়ালেখার খরচ ঠিকমতো দিতে পারেনা, এক্ষেত্রে সেই শিক্ষার্থীকে অবশ্যই পার্ট টাইম জব করতে হবে। এতে করে সে নিজের পড়াশোনা খরচ চালাতে পারবে এবং পরিবারে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারবে। আর পার্ট টাইম জব করলে শুধু ইনকাম হয় এমন বিষয় নয় বরং নিজেকে ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তোলা যায়।
পার্ট টাইম জব করে আয় করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে আপনি কিভাবে জব করবেন সেই বিষয়টি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হওয়া যায়। এভাবে একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার সাথে সাথে পার্ট টাইম জব করেও অনেক কিছু শিখতে পারবে। তাহলে বুঝতে পারছেন স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব করা কেন জরুরী। স্টুডেন্টরা কি ধরনের পার্ট টাইম জব করতে পারেন তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
স্টুডেন্টদের জন্য ১০টি পার্ট টাইম জব আইডিয়া
স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব আইডিয়া কি কি হতে পারে সেই সম্পর্কে আমরা এই অংশটিতে বিস্তারিত আলোচনা করব। মূলত স্টুডেন্টদের জন্য ১০টি পার্টটাইম জব আইডিয়া সম্পর্কে এখন জানানো হবে। এর ফলে আপনি আইডিয়াগুলো জেনে সহজেই পার্ট টাইম জব করে বাড়তি খরচ চালাতে পারবেন।
আমরা বেশিরভাগ অনলাইন part time job আইডিয়াগুলো তুলে ধরব। কারণ ঘরে বসে পার্ট টাইম জব করলে শিক্ষার্থীদের জন্য বেশি সুবিধাজনক হয়। আর অনলাইনে পার্ট টাইম জব করার জন্য মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের প্রয়োজন হবে। অবশ্যই ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
আর আপনি যেই পার্ট টাইম জবটি অনলাইনে শুরু করবেন আগে সেই বিষয়টি নিয়ে ভালোভাবে জানবেন এবং জ্ঞান অর্জন করবেন তারপর কাজ করা শুরু করবেন। তাহলে আপনি part time job করে সফলতা অর্জন করতে পারবেন এবং ইনকাম করতে পারবেন। নিম্নে স্টুডেন্টের জন্য সেরা ১০টি পার্টটাইম জব আইডিয়াগুলো তুলে ধরা হলোঃ
১. ডাটা এন্ট্রি বা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
ডাটা এন্ট্রি বা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজগুলো সাধারণত ঘরে বসেই করা যায় এবং এসব কাজের জন্য খুব বেশি অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র টেকনোলজি বিষয়গুলো সংক্রান্ত কিছু বেসিক জ্ঞান বা ধারণা থাকলেই এই কাজগুলো করা যায়। একজন স্টুডেন্টের টাইপিং দক্ষতা থাকলে সে খুব সহজেই data entry কাজ করে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবে।
তাহলে বুঝলেন ডাটা এন্ট্রি কাজ করার জন্য টাইপিং দক্ষতা থাকতে হবে। আর পাশাপাশি অবশ্যই ইংরেজি ভাষাতে টাইপিং করার অভ্যাস থাকতে হবে। মূলত ইংরেজি ভাষায় দক্ষ থাকলে ডাটা এন্ট্রির কাজটি খুব সহজে করা যায়। ডাটা এন্ট্রির কাজ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে করতে পারবেন। আপনি যদি ডাটা এন্ট্রির কাজ করেন তাহলে আপনাকে প্রথমে কিছু ডাটা দেওয়া হবে,
সেই ডাটা গুলো বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির জন্য কম্পিউটারে মাইক্রোসফট এক্সেল, মাইক্রোসফট অফিস ইত্যাদিতে টাইপিং করে সাজাতে হবে, আর এর বিনিময়ে আপনি কোম্পানির কাছ থেকে অর্থ পাবেন। এভাবে ডাটা এন্টির কাজগুলো হয়ে থাকে। আপনাকে সকল ডাটা দেওয়া হবে, সেই ডাটা গুলো আপনি এনালাইসিস করে সাজাবেন।
এভাবে ডাটা এন্ট্রির কাজ করে অনলাইনে প্রতিমাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করা যায়। ডাটা এন্ট্রির কাজগুলো সাধারণত কম্পিউটারে মাইক্রোসফট এক্সেল, ও মাইক্রোসফট অফিসে করতে হয়। সেক্ষেত্রে অবশ্যই MS Excel, মাইক্রোসফট অফিস ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে। ডাটা এন্ট্রির কাজ কি কি ধরনের হতে পারে তা নিম্নে দেখানো হলোঃ
- কোম্পানির সকল প্রোডাক্টগুলোর নাম ও প্রাইস কম্পিউটারে এন্ট্রি করা।
- অফিসে কখন কোন ব্যক্তি প্রবেশ করছে তার ডাটা এন্ট্রি করা।
- কোম্পানির হিসাব নিকাশের ডাটা এন্ট্রির কাজ করা।
- নির্দিষ্ট ছবি থেকে তথ্য নিয়ে ডাটা এন্ট্রি করা
- কোম্পানির এমপ্লয়ীদের বেতন স্কেল নিয়ে ডাটা শিট তৈরি করা।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিতে আরো বিভিন্ন ধরনের ডাটা এন্ট্রির কাজ রয়েছে। আর অনলাইনে এ ধরনের কাজগুলো করা যায়। একজন স্টুডেন্টের জন্য ডাটা এন্ট্রি কাজটি খুবই সহজ এবং সহজেই অনলাইন থেকে আয় করতে পারবে।
২. অনলাইন ট্রান্সক্রিপশন
যারা দ্রুত টাইপিং করতে পারেন, তাদের জন্য ট্রান্সক্রিপশন একটি উপযুক্ত পার্ট-টাইম জব। এই কাজে অডিও ভিডিও থেকে লেখা তৈরি করতে হয়। বিভিন্ন অডিও ও ভিডিও দেওয়া হবে সেগুলো দেখে দ্রুত টাইপিং করে লেখা তৈরি করতে হয়। এটি হলো অনলাইন ট্রান্সক্রিপশন কাজ। ধরুন আপনাকে একটি অডিও ফাইল দেওয়া হল, আপনাকে সেই অডিও ফাইলটি দেখে টাইপিং করে স্ক্রিপ লিখতে হবে। মূলত অডিও বা ভিডিও থেকে স্ক্রিপ্ট লেখা, আর এটিকেই অনলাইন ট্রান্সক্রিপশন বলে।
বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি অনলাইন ট্রান্সক্রিপশনের কাজ করিয়ে থাকে। ঘরে বসেই যে কোন ব্যক্তি এই কাজটি করতে পারবে। তবে এই কাজটি করার জন্য দ্রুত টাইপিং স্পিড ও ট্রান্সক্রিপশন করার দক্ষতা থাকতে হবে। বিশেষ করে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। স্টুডেন্টরা এই কাজটি করে অনলাইন থেকে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
৩. ফ্রিল্যান্স রাইটিং
যারা লেখালেখিতে দক্ষ, তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং রাইটিং একটি ভালো পার্টটাইম জব হতে পারে। এখানে ফ্রিল্যান্স রাইটিং বলতে কনটেন্ট রাইটিংকে বোঝানো হয়েছে। আপনারা সকলেই কনটেন্ট রাইটিং এর নাম শুনেছেন। আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে গুগলে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে যে তথ্যগুলো থেকে জ্ঞান অর্জন করে থাকি, সেই তথ্যগুলোকে কনটেন্ট রাইটিং বলা হয়ে থাকে।
কন্টেন্ট রাইটাররা বিভিন্ন রিসার্চ করে তথ্য প্রদান করে থাকে। আমার মতে Content writing স্টুডেন্টদের জন্য সেরা পার্টটাইম জব। কারণ এই কাজটি অনলাইনে ঘরে বসে সহজে করা যায়, সহজ বলতে কনটেন্ট রাইটিং আপনি মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটার ব্যবহার করে করতে পারবেন। যাদের কম্পিউটার নেই তারা শুধুমাত্র স্মার্টফোন ব্যবহার করে এই কাজগুলো করতে পারবেন।
আপনি যদি অল্প সময়ের মধ্যেই ৫০০ থেকে ১২০০ শব্দের মধ্যে একটি কনটেন্ট লিখে ফেলতে পারেন, তাহলে কনটেন্ট রাইটার হিসেবে অনলাইন থেকে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। বর্তমানে ইন্টারনেটে প্রচুর ওয়েবসাইট ও ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেখানে কনটেন্ট রাইটিং করে ইনকাম করা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রমোশনাল কনটেন্ট, প্রোডাক্ট রিভিউ কনটেন্ট লিখে আয় করতে পারেন।
বর্তমানে ছাত্ররা অনলাইনে কনটেন্ট রাইটিং করেই নগদ অর্থ উপার্জন করছে। মূলত আপনার যদি content writing skills ভালো থাকে এবং হাই কোয়ালিটির seo সম্পূর্ণ কন্টেন লিখতে পারেন তাহলে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে শুধুমাত্র 1200 থেকে 1500 শব্দের মধ্যে আর্টিকেল লিখেই দিনে ৫ থেকে ১০ ডলার আয় করতে পারবেন। তবে আর্টিকেলটি অবশ্যই ইংরেজি ভাষাতে হতে হবে। তবে বাংলাতেও কনটেন্ট লিখে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করা যাবে।
৪. ভিডিও এডিটিং
স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব আইডিয়াগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজ উপায় হল ভিডিও এডিটিং।আপনি যদি ভিডিও এডিটিং এ দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে এই কাজটি করে অনলাইন থেকে ব্যাপক টাকা আয় করতে পারবেন। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে ভিডিও এডিটরের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে বড় বড় ইউটিউবাররা ভিডিও এডিটরদের নিয়োগ দিয়ে থাকে।
একজন ভিডিও এডিটরের কাজ হল ভিডিওকে সুন্দরভাবে এডিট করে আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে তোলা। যাতে দর্শকরা ভিডিওটি দেখার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। বর্তমান সময়ে লক্ষ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার যুক্ত ইউটিউব চ্যানেলগুলো ভিডিও এডিট করার জন্য ভিডিও এডিটর খুলে থাকে। আপনি যদি দক্ষ ভিডিও এডিটর হয়ে থাকেন তাহলে সেই সকল ইউটিউব চ্যানেল এর সাথে কাজ করে মাসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন।
video editing software গুলো ব্যবহার করে সহজেই ভিডিও এডিট করা যায়। আপনি ইন্টারনেটে অনেক ভালো ভিডিও এডিটর সফটওয়্যার পাবেন যেটি ব্যবহার করে ভিডিও ক্লিপ , ভিডিও ফুটেজ আকর্ষণীয়ভাবে এডিট করতে পারবেন। একজন স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব হিসাবে ভিডিও এডিটিং সেরা হবে।
৫. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ইন্টারনেটে টাকা ইনকাম করার জনপ্রিয় মাধ্যম হল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। হ্যাঁ বন্ধুরা, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেই ঘরে বসে অনলাইনে সহজে আয় করা সম্ভব। অল্প সময়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রচুর টাকা ইনকাম করা যায়। এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য নিজস্ব বেশি ফলোয়ারযুক্ত ফেসবুক পেজ, বেশি ট্রাফিক যুক্ত ওয়েবসাইট ও বেশি সাবস্ক্রাইবার যুক্ত ইউটিউব চ্যানেল এর প্রয়োজন হবে।
আপনি বিভিন্ন কোম্পানির affiliate program এ জয়েন হয়ে তাদের প্রোডাক্টগুলো ফেসবুক পেজ, ব্লগিং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রচার করতে হবে। কোন ব্যক্তি আপনার এফিলিয়েট লিংক এর মাধ্যমে যখন প্রোডাক্টটি ক্রয় করবে তখন আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পেয়ে যাবেন। সাধারণত এভাবেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্যাসিভ ইনকাম হয়ে থাকে। ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করতে চাইলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করুন।
৬. গ্রাফিক্স ডিজাইন
আপনার যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন এর দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্সার প্ল্যাটফর্ম বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ক্লায়েন্টদের খুঁজে গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজ করে দিয়ে আয় করতে পারেন।লোগো ডিজাইন, পোস্টার ডিজাইন, সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে স্টুডেন্ট হিসেবে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তবে অবশ্যই গ্রাফিক্স ডিজাইন সেক্টরে দক্ষ হতে হবে, তাহলে আপনি গ্রাফিক ডিজাইন কাজ করে সহজেই অনলাইনে আয় করতে পারবেন।
একজন স্টুডেন্ট হিসেবে গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজটি করে সহজে ইনকাম করতে পারবে। আর গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজগুলোর চাহিদা প্রচুর রয়েছে। বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিভিন্ন কোম্পানিগুলো গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজ করানোর জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের হায়ার করে থাকে। আপনি সকল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট খুলে সকলকে জানাবেন যে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন কাজ করতে পারেন। স্টুডেন্টের জন্য পার্ট টাইম জব গ্রাফিক্স ডিজাইন খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
৭. ডেলিভারি সার্ভিস
বর্তমানে অনেক ই কমার্স ও ফুড ডেলিভারি কোম্পানিতে পার্ট টাইম ডেলিভারি বয়ের প্রয়োজন হয়।যেমন, ফুডপান্ডা, পাঠাও, বা অন্যান্য ডেলিভারি সার্ভিস। শিক্ষার্থী বন্ধুরা আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকলে পড়াশোনার পাশাপাশি ডেলিভারি বয় এর কাজ করতে পারেন। বিভিন্ন স্থানে ডেলিভারি সার্ভিস প্রদান করে মাসে ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। ডেলিভারি কাজের অন্যতম সুবিধা হল, নিজের পছন্দ অনুযায়ী সময় নির্ধারণ করে কাজ করা যায়।
আপনার ইচ্ছা থাকলে ডেলিভারি সার্ভিস কাজটি যে কোন সময়ে করতে পারেন। আর ডেলিভারি কাজের জন্য একজন ডেলিভারি ম্যানকে প্রতি মাসে আনুমানিক ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়ে থাকে। ছাত্র-ছাত্রী বন্ধুরা আপনাদের পড়াশোনার পাশাপাশি হাতে সময় থাকলে এই ডেলিভারির কাজগুলো করতে পারেন। স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব হিসাবে এটি আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে।
৮. অনলাইন সেলস/ড্রপশিপিং
অনলাইন প্লাটফর্ম যেমন ফেসবুক, instagram, বা ই-কমার্স সাইটে পণ্য বিক্রি ও ড্রপ শিপিং এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। আর এই ড্রপ শিপিং কাজ করে অনলাইনে ভালো অর্থ উপার্জন করা যায়। আপনি সরাসরি কোন পণ্য স্টক না করেই অর্ডার নিয়ে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন।
এতে করে বিনিয়োগের ঝুঁকি কম থাকে এবং ঘরে বসে কাজটি করা যায়। অনলাইনে বিভিন্ন সাইটে বা প্ল্যাটফর্মে, ফেসবুকে ড্রপ শিপিং কাজ গুলো করতে পারবেন। স্টুডেন্ট হয়ে থাকলে ঘরে বসেই অনলাইনে ড্রপ শিপিং করে আয় করুন।
৯. কাস্টমার সার্ভিস/কল সেন্টার
বিভিন্ন কোম্পানির কাস্টমার সার্ভিস বা কল সেন্টার এজেন্ট হিসেবে পার্ট টাইম জব করতে পারেন। এই ধরনের কাস্টমার সার্ভিস পার্ট টাইম জব গুলো শিফট ওয়ার্ক ভিত্তিক হয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনি দিনের শিফটে অফিসে গিয়ে কাস্টমার সার্ভিস বা কল সেন্টার কাজ করতে পারবেন, আবার চাইলে ঘরে বসে রাতে শিফটে কাস্টমার সার্ভিস দিতে পারবেন।
এভাবে দুই শিফটের যেকোনো একটিতে আপনি কল সেন্টার কাজ করতে পারেন। যেসব স্টুডেন্টদের কমিউনিকেশন করার দক্ষতা রয়েছে তারাই এই কল সেন্টার বা কাস্টমার সার্ভিস কাজটি করতে পারবেন। কাস্টমার সার্ভিস বা কল সেন্টার কাজ করার জন্য যোগাযোগ দক্ষতা ও কথা বলার কৌশল থাকতে হবে।
১০. অনলাইন কোর্স তৈরি
স্টুডেন্টরা ঘরে বসে পার্ট টাইম জব করতে চান তাহলে অনলাইন কোর্স তৈরি করুন। অনলাইন কোর্স তৈরি করে ঘরে বসেই ইনকাম করা যায়। আপনার যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর দক্ষতা থাকে তাহলে সেই বিষয়টি নিয়ে অনলাইন কোর্স বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন। অনলাইন কোর্সগুলো আপনি ফেসবুক, ইউটিউব ইনস্টাগ্রাম এর মাধ্যমে প্রচার করতে পারেন। বর্তমানে অনলাইনে ইনকাম করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো অনলাইন কোর্স তৈরি করা।
আপনি যেই বিষয়টিতে পারদর্শী সেই বিষয়টি নিয়েই কোর্স তৈরি করে আয় করতে পারেন। অনলাইনে কোর্স বানানোর জন্য কমিউনিকেশন স্কিল ভালো হতে হবে। কারণ কোর্সের ভিডিওর মাধ্যমে আপনাকে গ্রাহকদের ভালোভাবে বিষয়টি সম্পর্কে বোঝাতে হবে। তাহলেই অনলাইন কোর্স তৈরি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। মূলত যে বিষয়টি নিয়ে কোর্স বানাবেন সেই বিষয়টি সম্পর্কে বোঝানোর সক্ষমতা থাকতে হবে। এভাবে স্টুডেন্টরা পড়ালেখার বিষয়গুলো নিয়ে কোর্স বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন।
ঘরে বসে পার্ট টাইম জব আইডিয়া
যারা ঘরে বসে পার্টটাইম জব করতে চান তাদের জন্য আমরা এই অংশ নিয়ে এসেছি ঘরে বসে পার্ট টাইম জব আইডিয়া। এই অংশটি ভালো করে পড়লেই ঘরে বসে ইনকাম করার উপায় গুলো জানতে পারবেন। বিশেষ করে মেয়েরা ঘরে বসে পার্ট টাইম জব করতে পারবেন। ইতিমধ্যে আমরা উপরের অংশে স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব আইডিয়া তুলে ধরেছি। আর এখন ঘরে বসে পার্ট টাইম জব আইডিয়াগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
ওয়েব ডেভেলপমেন্টঃ যারা প্রোগ্রামিং বা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজে দক্ষ, তারা চাইলে ঘরে বসেই অনলাইনে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজ করে আয় করতে পারেন। বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে ওয়েবসাইট তৈরি করা, ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন করে দেওয়া ইত্যাদি কাজগুলো করে ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও ওয়েবসাইট পরিচালনার করার কাজ রয়েছে যা ফাইবার মার্কেটপ্লেস পেতে পারেন।
ফটোগ্রাফিঃ ঘরে বসে পার্টটাইম জব করতে চান তাহলে ফটোগ্রাফি করুন, স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব হিসাবে ফটোগ্রাফি নির্বাচন করতে পারেন। আপনার যদি ফটোগ্রাফি করার দক্ষতা থাকে এবং আপনি বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় ছবি তুলতে পারেন তাহলে ফটোগ্রাফি করেই বিভিন্ন সাইট থেকে আয় করতে পারবেন। ফটোগ্রাফি করে ইনকাম করার জন্য শাটার স্টক, প্রিন্টারেস্ট ওয়েবসাইটগুলোতে ছবি আপলোড করুন। বিশেষ করে ফটোগ্রাফি কনটেস্টে জয়েন হতে পারেন।
ব্লগিং বা ইউটিউবিংঃ আপনার যদি লেখালেখি করার ভাল দক্ষতা থাকে তাহলে ঘরে বসে ব্লগিং করে মাসে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারেন। পাশাপাশি ভিডিও বানানোর দক্ষতা ও কৌশল থাকলে সেটিকে ব্যবহার করে ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে ইনকাম করতে পারেন। বর্তমানে এই দুই মাধ্যমে অনেকেই অনলাইন থেকে প্রচুর টাকা ইনকাম করছে। আপনিও বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে দক্ষ হয়ে কাজ শুরু করুন তাহলে ঘরে বসে অনলাইনে বেশি টাকা ইনকাম করতে পাবেন।
টিউটরিংঃ স্টুডেন্টদের জন্য অন্যতম সেরা পার্ট-টাইম জব হলো টিউটরিং। আপনি যেসব বিষয়ে দক্ষ বা ভালো, সেই বিষয়গুলো নিয়ে স্কুল বা কলেজের ছোট ক্লাসের স্টুডেন্টদের পড়াতে পারেন। এই টিউটোরিং কাজটি অনলাইন ও অফলাইন দুই মাধ্যমে করতে পারবেন। বিশেষ করে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী যে কোন সময়ই ক্লাস নিতে পারবেন। ঘরে বসেই অনলাইনে টিউটরিং করে ইনকাম করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিংঃ ঘরে বসে অনলাইন ইনকাম করার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হল ফ্রিল্যান্সিং। আমাদের দেশে বর্তমানে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা পাশাপাশি অনলাইনে ছোটখাটো ফ্রিল্যান্সিং করে অনেক টাকা আয় করছে। ফ্রিল্যান্সিং কাজটি আপনি নিজের ইচ্ছামত করতে পারবেন, আপনার ইচ্ছা হলে যেকোন সময় ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে পারবেন।
তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে দক্ষ হতে হবে তাহলেই ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইনে আয় করতে পারবেন। মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ, কম্পিউটার ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যায়। ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লক্ষ টাকা আয় করুন।
ওয়েবসাইট ক্রয় বিক্রয়ঃ স্টুডেন্টরা ঘরে বসে অনলাইন থেকে আয় করতে চাইলে ওয়েবসাইট ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন। ওয়েবসাইট ক্রয় করে কিছুদিন কাজ করে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন। পাশাপাশি নিজেই ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে প্রতিদিন কনটেন্ট পাবলিশ করে google এডসেন্স অনুমোদন নিতে পারেন। আর গুগল এডসেন্স অনুমোদন পেলে আপনি সেই ওয়েবসাইটটি বিক্রি করে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্য
স্টুডেন্টদের জন্য পার্ট টাইম জব আইডিয়া গুলো সম্পর্কে আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও ঘরে বসে পার্ট টাইম জব আইডিয়া গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। যার ফলে আপনি এখন ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন। স্টুডেন্টরা পার্ট টাইম জব করতে চাইলে আর্টিকেলটিতে আমাদের দেখানোর উপায় গুলো অনুসরণ করুন। আর ধৈর্য ও পরিশ্রম দিয়ে কাজ করুন তাহলেই পার্ট টাইম জব করে ঘরে বসে আয় করতে পারবেন।